রেহমান সাহেব অনেকদিন থেকেই নিজে চালিয়ে অফিসে যাচ্ছেন। ড্রাইভার নিয়োগ করা দিন দিন ঝামেলার মনে হচ্ছে। খাওয়া নিয়ে বদনাম, বাসার কথা অফিসে, অফিসের কথা বাসায়, গাড়িতে বসে বলা সব কথা বিভিন্ন জায়গায় বিনে পয়সায়, আর যদি দূর্বল মুহুর্তে পায় তাহলে আস্তে করে কিছু চেয়ে বসা বা অন্যের বিরুদ্ধে কিলিক মারা, এসবে তিনি ত্যক্ত এবং বিরক্ত।

ড্রাইভার কেন রাখতে হয় তার তিনটি কারণ তিনি বের করেছেন। এক গাড়ি পরিস্কার আর পার্কিং এর ঝামেলা এড়াতে, দুই একই গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন ডিউটি করা, তিন………………। ভাবতে ভাবতে রেহমান সাহেব ব্রেক চেপে ধরে গাড়িকে বামের লেনে নিয়ে গেলেন এবং আতংকে অস্থির হয়ে ব্রেকে প্রচন্ড চাপ দিলেন। হলুদ শার্ট পরা মাঝ বয়েসী ভদ্রলোক এমনভাব করলেন যেন সাদা গাড়িটি উনি দেখছেন না। রেহমান সাহেব গাড়ির জানালা নামিয়ে চিৎকার করে বললেন ‘অসভ্য’। লোকটি এবার চোখ পাকিয়ে কাছে আসলেন, “কি বললেন? অসভ্য আপনি, গাড়ি চালাতে জানেন না রাস্তায় নেমেছেন কেন?”

রেহমান সাহেব বললেন ‘এভাবে কেউ বাসে উঠে?’

চলেনতো লাট সাহেবের মত কি করে বুঝবেন কেন উঠে, কিভাবে উঠে!

কথা বাড়িয়ে লাভ নেই দেখে রেহমান সাহেব গাড়িতে টান দিলেন। হলুদ সার্ট পরা লোকটি আগের জায়গায় গিয়ে দাড়িয়েছে, বিড়বিড় করেই চলেছে।

ঠিক দশফুট দূরে একজন ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে, ঘটনাটি সে দেখেছে না দেখেনি তাও বোঝা যাচ্ছে না। রেহমান সাহবে জীবনে বহুবার এদের সাহায্য চেয়ে দেখেছেন পাননি। যারা শুনেছে সবাই বলে ‘ভালই হয়েছে যে আসেনি, আসলে ভয় দেখাবে ‘থানায় গাড়ি নিয়ে যাব’, লাইসেন্স নিয়ে আটকে রাখবে ঘন্টার পর ঘন্টা, কেস ও দিবে না, কিছু বলবেও না। তাড়া দিলে দুকথা শুনিয়ে দেবে। কথাও জানে মাশাল্লাহ ঝাড়া তিন দিন গা-হাত-পা জ্বলবে নিশ্চিত। ‘ ভাবতে অবাক লাগে এরা জনগনের টাকায় বেতন পায়! তারা অবশ্য এটাকে জনগনের টাকা মনে করে না, তারা রাজ-কর্মচারী। রাজ্যে থাকতে গেলে ট্যাক্স দিতে হবে এটাই স্বাভাবিক। রেহমান সাহেবের মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা ট্যাক্স দেইনা দেশে থাকবার জন্য ভাড়া দেই। বাড়িওয়ালারা এরকম আচরণ করেতেই পারে! অফিসে পৌছে লিফটে উঠতে উঠতে তিনি ঘড়ি দেখেন। আজ লেট।